(সবচেয়ে সহজ ৫টি) জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

by Arif Rabbani Hasan
জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

আমরা সবাই কমবেশি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকি। আর জ্বর কমাতে অনেকই আবার ঔষধ পর্যন্ত খেয়ে থাকি, যা একদমই অনুচিত। খুব সহজে জ্বর কমানো যেতে পারে কেবল ঘরোয়া কিছু উপায়ে। তাই আজ আমরা কথা বলবো, সবচেয়ে কার্যকর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সমূহ নিয়ে বিস্তারিত।

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

১) মাথায় জলপট্রি দেওয়াজ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা দ্রুত কমাতে চান? ব্যবহার করতে পারেন জলপট্টি। এটি ব্যবহার করা যেমন সহজ তেমনি কার্যকরী।

মাথায় জলপট্টি দেওয়ার জন্য প্রথমে একটি পরিষ্কার রোমাল ভাজ করে পানিতে ভিজিয়ে নিতে হবে।

রোগীর কপালে ভেজা রোমালটিকে আলতোভাবে বসিয়ে দিতে হবে। এভাবে কিছুক্ষণ পরপর একইভাবে রুমালটি ভিজিয়ে পুনরায় কপালে বসিয়ে দিতে হবে।

অত্যন্ত সহজ একটি পদ্ধতি হলেও এই পদ্ধতি কয়েকবার অনুসরণ করলে খুব দ্রুত শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসাবে ইনশাআল্লাহ।

আরো জানুনঃ দাতের ব্যাথার ঘরোয়া চিকিৎসা

আরো জানুনঃ দাঁদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

২) তুলসি পাতা ব্যবহার করাজ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

জ্বর কমানোর জন্য তুলসী পাতা অত্যন্ত কার্যকরী একটি ভেষজ।

তুলসি পাতায় থাকে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান।

যেসকল উপাদান জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা, ব্রংকাইটিস, ম্যালেরিয়ার মতো অনেক রোগ প্রতিকারে কার্যকারী ভুমিকা পালন করে।

বহু গুণ সম্পন্ন এই ভেসজটি জ্বর কমানোর জন্য ব্যবহার করাও একদম সহজ।

আপনি চাইলেই কয়েকটি তুলসী পাতা সংগ্রহ করে জ্বর কমানোর ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করতে পারেন।

এক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে আট-দশটি তুলসী পাতা সংগ্রহ করতে হবে। তারপর তুলসীপাতা গুলোকে পরিষ্কার পানি দিয়ে সুন্দর ভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পাতাগুলোকে একটি পাত্রে দিয়ে পানির সাথে গরম করে ফুটিয়ে নিতে হবে।

তারপর সেই ফুটানো পানি প্রতিদিন সকালে একটা পরিমাণ খেলে শরীরের তাপমাত্রা তো কমবেই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে ইনশাআল্লাহ।

৩) মধুর মিশ্রন ব্যবহার করাজ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

সকল রোগের মহা ঔষধ হচ্ছে মধু। ঘরোয়া উপায়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে মধুর অবদান অন্যান্য কোনো উপাদান এর থেকে কম নয়।

মধুতে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যেমন শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়া কে ধ্বংস করে তেমনি জ্বর কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তবে সব থেকে ভালো ফলাফলের জন্য মধুর একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে।

মধুর এই মিশ্রণটি এর জন্য প্রয়োজন হবে এক কাপ গরম পানি, অর্ধেকটা লেবুর রস ও এক চা-চামচ মধু।

সবগুলো উপাদানকে একটি গ্লাস নিয়ে সুন্দর ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সে মিশ্রনটিকে দিনে দুইবার খেতে হবে। মধুতে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকার কারনে ভাইরাসজনিত জ্বর খুব দ্রুত উপশম হবে ইনশাল্লাহ।

৪) আদা ব্যবহার করাজ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

 আদা কে বলা হয় একটি আদর্শ প্রাকৃতিক অ্যান্টিভাইরাস। তাই ভাইরাসজনিত  জ্বর এর ক্ষেত্রে এটি প্রতিশেধক হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। তবে সবচেয়ে ভালো ফলাফলের জন্য আপনি  আদার একটি মিশ্রণ তৈরী করে নিতে পারেন।

আধা চা চামচ আদা বাটা এক কাপ গরম পানিতে ভালোভাবে ফোটিয়ে নিন। তারপর সেখানে যুক্ত করুন ১ চা চামচ মধু। তৈরি হয়ে গেল আদা ও মধুর মিশ্রণ। দ্রুত জ্বর কমানোর জন্য মিশ্রণটি দিনে ৩-৪ বার পান করুন।

প্রথম দিন থেকেই জ্বর কমতে শুরু করবে তবে নিয়মিত দুই-তিনদিন পান করলে জ্বর সম্পূর্ণরূপে নিরাময় হবে ইনশাল্লাহ।

আরো জানুনঃ দাতের ব্যাথার ঘরোয়া চিকিৎসা

আরো জানুনঃ দাঁদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

৫) রসুন ব্যবহার করা

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

জ্বর কমানোর জন্য আদর্শ একটি ঘরোয়া পদ্ধতি খুজছেন? ওয়েল, আপনার জন্য আছে একদম সহজলভ্য একটি উপাদান রসুন। জ্বর কমানোর ক্ষেত্রে রসুন আপনাকে একটি চমকপ্রদ ফলাফল দিতে পারে।

এক্ষেত্রে আপনাকে নিতে হবে এক কোয়া রসুন ও এক কাপ গরম পানি। রসুন টিকে কুচি কুচি করে কেটে ঠিক ১০ মিনিট গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে রসুন এর প্রয়োজনীয় উপাদান পানিতে মিশ্রিত হবে।

তারপর পানি টুকু একটি কাপে নিয়ে দিনে দুইবার চায়ের মত পান করতে হবে। এই মিশ্রণটি পান করলে ধীরে ধীরে জ্বর কমতে শুরু করবে।

আরো দ্রুত জ্বর ভালো করার জন্য অন্য একটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে কয়েক কোয়া রসুন এবং অল্প একটু অলিভ অয়েল। কয়েক কোয়া রসুন কে ভালোভাবে বেটে নিতে হবে।

এবার বেটে নেওয়া রসুনটুকু  অল্প পরিমাণ অলিভ অয়েল এর সাথে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে।

তারপর রাতে ঘুমানোর পূর্বে মিশ্রণটিকে পায়ের তালুতে সুন্দর ভাবে মিশিয়ে একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে পেচিয়ে রাখতে হবে।

এভাবে সারারাত রেখে দিতে পারলে সকালে উঠে দেখবেন আপনার জ্বর সম্পূর্ণরূপে কমে গেছে।

তবে শিশু আর গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত না।

জ্বর হলে কেন ঔষধ খাওয়া উচিত নাঃ

সবচেয়ে বেশি হয় এমন রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জ্বর।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে আমাদের অধিকাংশেরই জ্বরের ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান নেই।

কোন কারনে শরীরের তাপমাত্রা যদি একটু বাড়ে তাহলেই আমরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই এবং হুটহাট বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খেয়ে ফেলি।

কেউ কেউ আবার দ্রুত জ্বর ভালো করার জন্য আক্রান্ত  হওয়ার প্রথম দিনেই এন্টিবায়োটিক খেয়ে ফেলি।

শরীরের তাপমাত্রা একটু বাড়া মাত্রই অধিক পাওয়ারের ঔষধ সেবন বা এন্টিবায়োটিক গ্রহন আদৌ উচিত কি?

প্রথমত, যেকোনো ধরনের রোগের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ গ্রহন করাই উচিত না।

আর সেখানে সামান্য একটু জ্বরের জন্য এন্টিবায়োটিক এর কথা তো ভাবাই যায় না।

কেননা আমাদের শরীর একটি নির্দিষ্ট পরিমান তাপমাত্রাকে নিজে নিজেই প্রতিরোধ করতে পারে।

তাহলে জ্বর হলে আমাদের সঠিক কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত?

ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক না খেয়ে আপনি সর্বোচ্চ একটা প্যারাসিটামল খেতে পারেন।

আশা করছি আরটিক্যালটি আপনার উপকারে আসবে।

আরো জানুনঃ দাতের ব্যাথার ঘরোয়া চিকিৎসা

আরও জানুনঃ দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

You may also like

Leave a Comment